About the Department
Phone: +88-01930775178
Email: sanskrit@blcollege.edu.bd
ব্রজলাল কলেজ ও সংস্কৃত বিভাগের জন্মদিন একই। হিন্দু একাডেমী প্রতিষ্ঠার প্রথম লগ্ন থেকেই এ প্রতিষ্ঠানে সংস্কৃত বিভাগ বিদ্যামান। হিন্দুধর্মীয় শিক্ষা প্রদানের জন্য চতুষ্পাঠী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ বিভাগটির জন্ম। পণ্ডিত দেবনাথ মুখোপাধ্যায় স্মৃতিতীর্থের পরিচালনায় সর্বপ্রথম সংস্কৃত বিভাগ চালু হয়। ভারতবর্ষে যখন দুর্দান্ত প্রতাপে ধর্মবিবর্জিত শিক্ষা বিস্তার লাভ করছিল তখন ব্রজলাল শাস্ত্রী ও অন্যান্যরা পাশ্চাত্যের শিল্প ও বিজ্ঞানের সাথে ভারতীয় ধর্ম ও দর্শনের সমন্বয়ে এক নতুন ধারার শিক্ষা প্রবর্তনের উদ্দেশ্যে কলকাতার হিন্দু কলেজের আদলে দৌলতপুরে হিন্দু একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেন। এ প্রতিষ্ঠানের বিশেষত্ব হল একদিকে রাসায়নিক গবেষণার অপর দিকে দেবভাষায় আচার্যের বেদান্ত দর্শন আলোচনা। ব্রজলাল কলেজের সংস্কৃত বিভাগটি ছিল একসময় এই এলাকার সাহিত্য তত্ত্ব। দর্শন, ব্যাকরণ, অলঙ্কার চর্চার কেন্দ্রবিন্দু। সংস্কৃত বিভাগে বহু বিখ্যাত বিখ্যাত পণ্ডিত অধ্যাপনা করেছেন, তাঁদের মধ্যে পণ্ডিত দেবনাথ মুখোপাধ্যায়, মহেন্দ্রনাথ ভট্টচার্য, আনন্দচরণ দত্ত, উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, শিবনাথ ভট্টাচার্য, তারিণী চরণ দত্ত, বিদ্যাভূষণ কাব্যতীর্থ, সুরেন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য ও বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্যের নাম স্বর্তব্য।
১৯৪৭ ই সালে দেশ বিভাগের ফলে অধিকাংশ হিন্দু শিক্ষক দেশ ছেড়ে চলে গেলে দীর্ঘ ১০ বছর অর্থাৎ ১৯৫৭ ইং সাল পর্যন্ত সংস্কৃত বিভাগে কোন শিক্ষক কর্মরত ছিলেন না। ১৯৫৭ সনের ১ জুলাই তারিণী চরণ দত্ত (বিএ)-কে সংস্কৃত বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৬৭ সনে কলেজ সরকারি হলে তিনি বয়স জনিত কারণে অবসরে যান। এরপর ১৯৬৮ সালে সতীশ চন্দ্র বাড়ই ১৯৮৮ সালে অমল কুমার ভট্টাচার্য, ১৯৯৪ সালে রমেশ চন্দ্র বিশ্বাস, ১৯৯৬ সালে আশীষ কুমার মণ্ডল, ২০০২ সালে ড. সমীর রঞ্জন সরকার, ২০০৫ সালে অজয় কুমার সাহা, ২০১৫ সালে ড. রীনা রানী বৈদ্য এবং পারুল রানী বিশ্বাস এ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। অধ্যাপক আশীষ কুমার মণ্ডল এর অবসরে গমনের কারণে। বর্তমানে অধ্যাপক পারুল রানী বিশ্বাস এ বিভাগে কর্মরত আছেন।
যে উদ্দেশ্য নিয়ে সংস্কৃত বিভাগ চালু হয়েছিল তা আজ ইতিহাস মাত্র। যদিও ভারতীয় উপমহাদেশের শিক্ষার সূত্রপাত সংস্কৃত ভাষার মাধ্যমে তবুও বর্তমানে বাস্তব কর্মক্ষেত্রে উপর্যুক্ত ব্যবস্থা না থাকার জন্য সংস্কৃত আজ বিলুপ্তির পথে। সকল ক্ষেত্রেই সহযোগিতার অভাবে বিভাগটি নামে মাত্র চালু আছে। অধিকাংশের ধারণা ভাষাটি মৃত তাই আজ আর এর প্রয়োজনীয় নেই। অথচ ভারতবর্ষের হাজার হাজার বছরের সাহিত্য, ধর্ম, দর্শনসহ সভ্যতার সব লিখিত দলিল এ ভাষাতেই আছে। এটি কেউই বিবেচনা করেন না। বর্তমানে বাজার অর্থনীতির যুগে কোন বিষয়ের তাত্ত্বিক চর্চা বিজ্ঞান মনস্ক মানুষকে হয়তো আনন্দ দেয় না অথবা হাজার বছরের ঐতিহ্যমণ্ডিত একটি সমৃদ্ধ যুগের অর্জন চর্চার অভাবে আজ এমন মৃত্যু ঘটলেও কাউকে ভাবায় না। হয়তো তাই সংস্কৃত বিভাগ আজ উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি পাস কোর্সের সামান্য সংখ্যক শিক্ষার্থী এবং দু’জন অধ্যাপক নিয়ে নিষ্প্রভভাবে টিমটিম করে জ্বলছে।
Head of the Department
