BL COLLEGE JOURNAL

“Journal writing gives us insights into who we are, who we were, and who we can become”
– Sandra Marinella

অমর মিত্রের ধুলোগ্রাম: বাস্তুহীনের বিকল্প ‘জামতলি’

Author

শ্রাবন্তী মজুমদার, গবেষক, বাংলা বিভাগ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

স্মৃতি এবং পুনর্বাসনের মধ্যে দিয়ে যে সাহিত্যধারা গড়ে উঠেছিল অমর মিত্র মূলত সেই ধারার লেখক। ছেড়ে যাওয়া প্রতিবেশী-পরিজনের কষ্ট, অবদমিত আবেগ ও ছিন্নমূল হওয়ার বেদনায় লেখা স্মৃতিকথা দিয়েই পার্টিশন সাহিত্যের সূচনা। অমর মিত্র মূলত এই ধারারই লেখক। তাঁর কাছে দেশভাগ মানেই সব শেষ হয়ে যাওয়া নয় বরং দেশভাগের ৭৪ বছর পেরিয়ে এসেও এই আলোচনা প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে কেন না এটা প্রমাণিত যে ১৯৪৭ সালেই সব কিছু শেষ হয়ে যায়নি, তিনটি প্রজন্মের পরেও দেশভাগ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এই বেদনা, এই দহন শিকড়সন্ধানী করে তুলবে। দেশভাগ যেমন একটি বেদনাদায়ক ঘটনা পাশাপাশি এই বিষয়ে নিমজ্জিত হয়ে আলোচনার পরিসরও কম বেদনাদায়ক নয়। সেই বিচ্ছেদ বেদনার বিস্মৃতি রাশি হয়েই অমর মিত্রের কাছে দেশভাগ বা দেশত্যাগের মানবিক ট্রাজেডি অনিবার্যভাবেই উঠে এসেছে যার নির্মম সাক্ষ্য বহন করে চলেছে খন্ডিত বাংলার চলমান সাহিত্য। তাঁর ধুলোগ্রাম উপন্যাস যেন সার্বিকভাবে ধারণ করে আছে দুই পারের ইতিহাসকে। ছেড়ে আসার যন্ত্রণা এবং আবার নতুন করে গড়ে তোলার সংকল্পের মধ্যে দিয়েই দৃঢ় হয়ে উঠেছে এর কাহিনি। ১৯৪৭ -এর দেশভাগ এবং ১৯৪৮ -এর শেষ দিকে খুলনার দাঙ্গার ফলে পূর্ববঙ্গ থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী এসে ভিড় করে। বেসামাল পরিস্থিতিকে আয়ত্তে আনতে চেয়ে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫০ -এ নেহেরু-লিয়াকত চুক্তি ঠিক হয় এবং তাতে বলা হয় ৩১-শে ডিসেম্বরের মধ্যে উদ্বাস্তুরা যদি ফিরে যায় তবে পূর্ববঙ্গ সরকার তার সম্পত্তি ফিরিয়ে দেবার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। কিন্তু এই প্রস্তাবও শৃঙ্খলা দিতে পারেনি বরং বিক্ষোভের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিয়েছিল। অগণিত বাস্তুত্যাগী মানুষদের বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়েই পুনর্বাসন বা সম্পত্তি একচেঞ্জের খেলা চলে যার কোনোটাই পরিপূরক ছিল না। কিছু মানুষ তাদের নিজেদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিজেরাই হাতে তুলে নিয়েছিল, গড়ে তুলেছিল উদ্বাস্তু কলোনি। এই কলোনিগুলিকে কেন্দ্র করে এবং অবশ্যই কলোনিবাসীদের অধিকার ও অধিকৃত জমির আইনি স্বীকৃতির দাবিতে এপার-ওপারের বাঙালির যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত, প্রতিহিংসা, আবেগ- বিহ্বলতা কাজ করেছে তারই এক জীবন্ত ভাষ্য ধরা রয়েছে অমর মিত্রের ধুলোগ্রাম উপন্যাস।

Keywords: দেশভাগ, উদ্বাস্তু, কলোনী, আত্মপরিচয়ের সংকট, সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস

References:

১। অমর মিত্র, ভাসিয়ে দিয়েছি কপোতাক্ষ জলে, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, দ্বিতীয় সংস্করণ, মে ২০১৬, পৃ. ১৭৮

২। অমর মিত্র, হারানো দেশ হারানো মানুষ, সোপান পাবলিকেশান, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ, ২০১৬, পৃ. ৪০

৩। ঐ, পৃ. ৬১, ৬২

৪। ঐ, পৃ. ৫৪

৫। ঐ, পৃ. ৬২

৬। ঐ, পৃ. ৬৩

৭। ঐ, পৃ. ১৭২

৮। Urvashi Vutalia, The Silence Of Other Side, Penguin books India, 1998, Gurgaon, Pp. 24

৯। অমর মিত্র, হারানো দেশ হারানো মানুষ, সোপান পাবলিকেশান, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ, ২০১৬, পৃ. ২৪১

How to Cite

MLA 9th Edition

মজুমদার শ্রাবন্তী. “অমর মিত্রের ধুলোগ্রাম: বাস্তহীনের বিকল্প ‘জামতলি’.” বিএল কলেজ জার্নাল, ভলিউম ৪, ইস্যু ১, জুলাই ২০২২, পৃ. ৩০-৩৮.  https://doi.org/10.62106/blc2022v4i1b3

 

APA 7th Edition

মজুমদার শ্রাবন্তী. (২০২২). অমর মিত্রের ধুলোগ্রাম: বাস্তহীনের বিকল্প ‘জামতলি’. বিএল কলেজ জার্নাল, ৪ (১), ৩০-৩৮.  https://doi.org/10.62106/blc2022v4i1b3

 

License

Copyright (c) 2023 GOVT. BRAJALAL COLLEGE

Indexed In